বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) থেকে, মোঃ বিপ্লব:: রাণীশংকৈল পুরাতন জেলখানাটি অযত্ন আর অবহেলায় এখন যেন ভূতুরে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। এটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে চলে বখাটে নেশাখোর ছেলেদের আড্ডা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে অনেকেই এখন জেলখানাটি ভুতের বাড়ি নামেই চেনে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম এইচ এম এরশাদ বিগত ৩০ বছর আগে রানীশংকৈল উপজেলায় ২০০ কয়েদির ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন মিনি সাব জেলখানা নির্মিত করেন। এরশাদের আমলে এ জেলখানাটি ব্যবহৃত হলেও পরবর্তী বিএনপি সরকারের আমলে জেলখানাটি পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকাবাসী অনেকে আভিযোগ করে জানান, সরকারি একটি পরিত্যক্ত ভবনের সকল দরজা, জানালাসহ সব ধরনের লোহার রড ও বিভিন্ন ওয়ালের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে কে বা কাহারা। স্থানীয়রা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম দেখাশোনা না করার কারণে এবং জেলখানাটি চারপাশের প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও করা তাই সহজে ভিতরে দেখা যায় না। সেখানে সকাল কিংবা রাত যখনই সময় পায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা নিরাপদে মাদক বিক্রি করে ও সেখানেই সেবন করে।
স্থানীয় মাজেদ খালেক রশিদ সহ কয়েকজন বলেন, এখানে সরকারের পক্ষ থেকে যদি দেখাশোনা বা এটি সংস্কার করা হতো তাহলে মাদকাসক্ত কোন ব্যক্তিই আড্ডা জমাতে পারতো না।
স্থানীয়রা আরো বলেন, এই পুরাতন জেলখানার যে বিভিন্ন বিল্ডিং রয়েছে এগুলো মেরামত করে যদি কোন অফিস বরাদ্দ বা থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করা যায় তাহলে সরকার এখান থেকেও অনেক রাজস্ব আদায় করতে পারতেন। এখন এলাকার মানুষের দাবি উত্তি বয়সের ছেলে থেকে শুরু করে অনেক যুবক মাদকসেবী এখানে এসে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি ও সেবন করে। এর ফলে এলাকার শিশুদের জীবনমান অনেকটা ঝুকিতে রয়েছে। এটি এখনই যদি সংস্কার না করা হয় তাহলে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের হাত থেকে রক্ষা কঠিন হয়ে যাবে এবং এলাকাটি মাদকের অভয়ারণ্যে পরিনত হবে।
সন্ধ্যার পরে বখাটে নেশাখোর ছেলেদের আড্ডা বসে জেলখানার সামনে। সন্ধ্যার পরে জেলখানার আশেপাশে কেউ যায়না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন এবং জেলখানাটি পুনরায় সংস্করণ করার দাবি জানান তারা।
এবিষয়ে জানতে গেলে তহশিলদার মোঃ আবু রায়হান বলেন, জেলখানাটি ২ একর জমির উপর রয়েছে, এটি দীর্ঘদিনেও কোন রক্ষনাবেক্ষন করা হয়নি। এটি তদারকি করে সরকারী কাজে ব্যবহৃত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আল্লামা ওয়াদুদ বিন নূর আলিফ বলেন, এই জেলখানার জমিটি ফেলে না রেখে সংস্কার করে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
এবিষয়ে মুঠোফোনে উপজেলা মহিলা বিষক কর্মকর্তা মো. আবু বেল্লাল সিদ্দিক জানান, এ বিষয়ে আমি স্থানীয় প্রশসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। স্থানীয় কিছু মানুষের জন্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে তাই এটি সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে সকলের সহযোগিতা পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী (অতিরিক্ত) মোঃ রফিকুল হাসান মুঠোফোনে জানান, এই পুরনো জেলখানাটি অনেক আগেই মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন আমাদের কোন কিছু করণীয় নেই।